অনলাইনে ইনকাম করার উপায়

অনলাইনে ইনকাম করার উপায় ,ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয়

বর্তমানে আমাদের দেশের অসংখ্য লোক অনলাইনে ইনকাম করছেন। সে জন্য নতুনরা অনুপ্রাণিত হয়ে অনলাইন ইনকাম করার চেষ্টা করছে। আবার কেউ কেউ অনলাইনে ইনকাম বাংলাদেশী সাইট থেকে করে সহজে পেমেন্ট পেতে চাইছেন। আজকে আমরা অনলাইনে ইনকাম করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিবো। আপনার মূ্ল্যবান সময়ের সামান্য সময় ব্যয় করে যদি কিছু টাকা পয়সা অনলাইনে আয় করে নিজের প্রয়োজন মিটাতে পারেন, তাহলে অন্যের কাছ থেকে ধার কর্জ করে চলার চেয়ে খারাপ কি? ইন্টারনেট জগৎটা Facebook, Social Media and Gaming এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।

অনলাইনে ইনকাম করার জন্য কী কী প্রয়োজন?

আপনি একজন ছাত্র, গৃহিনী কিংবা চাকরিজীবি যাই হয়ে থাকেন না কেন, আপনার লেখা-পড়া বা কাজের ফাঁকে কিংবা চাকরির পাশাপাশি অবসর সময়ের ২/৩ ঘন্টা ব্যয় করে মাসে মোটামুটি ভালোমানের স্মার্ট এমাউন্ট অনলাইনে আয় করতে সক্ষম হবেন। এ ক্ষেত্রে আপনার চাকরি কিংবা লেখা পড়ায় কোন ধরনের ব্যাঘাত ঘটবে না। আপনার মূল প্রফেশন ঠিক রেখেও সামান্য সময় ব্যয় করে অনলাইন হতে টাকা আয় করে নিতে পারবেন।

অনলাইনে আয় করার নিশ্চিত উপায় আছে কিনা?

অনলাইন কাজ শুরু করার পূর্বে অনেকের মনে আরেকটি প্রশ্ন জাগে যে, আমি অনলাইনে আয় করার পর সেই টাকা কিভাবে হাতে পাব? অনলাইনে আয়ের টাকা কিভাবে হাতে পাবেন সেই বিষয় নিয়ে আপনাকে চিন্ত করতে হবে না। অনলাইনের যে কোন প্লাটফর্ম হতে আপনি টাকা ইনকাম করুন না কেন সেই টাকা আপনার হাতে পৌছতে কোন ধরনের সমস্যা হবে না।

বর্তমানে প্রত্যেকটি অনলাইন প্লাটফর্ম তাদের গ্রাহকের উপার্জিত টাকা বিশ্বস্ততার সহিত হাতে পৌছে দেয়। এ ক্ষেত্রে আপনার অনলাইনে আয়ের টাকা কেবলমাত্র বিকাশের মাধ্যমে পেতে হবে এমনটা চিন্তা করা উচিত নয়। অনলাইনে সকল বড় প্লাটফর্মগুলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা হাতে পৌছে দেয়। সেই জন্য অনলাইন হতে আয়ের টাকা খুব সহজে আপনার যেকোন ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে নিতে পারবেন।

অনলাইন ইনকাম সাইট ২০২১

এখন আমরা আপনাদের সাথে অনলাইনে আয় করার কয়েকটি নিশ্চিত উপায় শেয়ার করার পাশাপাশি কয়েকটি জনপ্রিয় অনলাইন ইনকাম সাইট শেয়ার করব। আশাকরি আপনি ধৈর্য্যধারণ করে ২/৪ মাস কাজ করলে আপনিও মাসে মাসে অনলাইনে ইনকাম করতে সক্ষম হবেন। অনলাইনে কাজ শুরুর দিকে আপনার কাছে বিষয়টি কঠিন মনে হবে। কিন্তু ধীরে ধীরে আপনার কাছে সহজে হয়ে উঠবে। আপনি একটি জিনিস মনে রাখবেন, কেউ একদিনে বড় হয়নি, বড় হওয়ার জন্য সময় দিতে হয় এবং ধৈর্য্য ধরে কাজ চালিয়ে যেতে হয়।

০১। ব্লগ থেকে ইনকাম

ব্লগিং হচ্ছে অনলাইন ইনকাম এর সবচাইতে জনপ্রিয় এবং কার্যকরী পদ্ধতি। আপনি একটি ব্লগ তৈরি করে ব্লগে ভালোমানের আর্টিকেল লেখার মাধ্যমে ব্লগকে জনপ্রিয় করতে পারলে ব্লগিংয়ের মাধ্যমে আজীবন অনলাইনে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

কিভাবে ব্লগ থেকে টাকা ইনকাম করবেন?

ব্লগ থেকে টাকা ইনকাম করার বিষয়ে আমাদের অনেকের মধ্যে ভূল ধারনা আছে। অধিকাংশ লোক মনে করে শুধুমাত্র ব্লগ তৈরি করলেই ব্লগ থেকে ডলার ইনকাম করা যায়। আসলে ব্লগ তৈরি করলে বা কারো ব্লগ থাকলেই সেই ব্লগ থেকে কোন ধরনের টাকা ইনকাম  করা যায় না। ব্লগ থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য ব্লগে নিয়মিত ভালোমানের আর্টিকেল শেয়ার করার পাশাপাশি ব্লগকে জনপ্রিয় করে তুলার মাধ্যমে ব্লগে ভিজিটর নিয়ে আসতে হয়।

যখন আপনার ব্লগে প্রচুর পরিমানে ট্রাফিক বা ভিজিটর থাকবে তখন আপনার ব্লগের মাধ্যমে অনলাইনে ইনকামের পথ তৈরি হবে। সেই মুহুর্তে আপনার ব্লগকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন উপায়ে ভালোমানের টাকা ইনকাম করতে পারবেন। ব্লগ থেকে কি পরিমান ইনকাম হবে সেটা আপনার ব্লগের জনপ্রিয়তার উপর ডিপেন্ড করবে। অর্থাৎ আপনার ব্লগে যত বেশি ভিজিটর থাকবে আপনার ইনকাম তত বেশি হবে।

 এডসেন্স থেকে টাকা ইনকাম

এডসেন্স হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপনের (Advertisement) Program. এটি গুগল কর্তৃপক্ষ স্বয়ং নিজে পরিচালনা করছে। সাধারণত যে কোন বড় কোম্পানি তাদের পন্যের প্রচার করার জন্য টেলিভিশনে এবং খবরের কাগজে তাদের পন্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। তখন আমাদের মত সাধারণ মানুষ টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দেখে বা খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেখে সেই কোম্পানির পন্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারে।

ঠিক একইভাবে বড় বড় কোম্পানিগুলো তাদের পন্যের বিজ্ঞাপন অনলাইনের মাধ্যমে প্রচারের জন্য কোম্পানির পন্যের বিভিন্ন বিজ্ঞাপন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গুগলের কাছে জমা দেয়। গুগল তখন এডসেন্স এর মাধ্যমে সেই বিজ্ঞাপনগুলো আমাদের মত সাধারণ ব্লগে ব্যবহার করার অনুমতি দেয়। আর আমাদের ব্লগে সেই বিজ্ঞাপনে যখন লোকজন ক্লিক করে তখন আমাদের ইনকাম হয়।

কিভাবে এডসেন্স পাবেন?

আপনার ব্লগে যখন পর্যাপ্ত ভিজিটর থাকবে তখন জিমেইল আইডি ব্যবহার করে আপনার ব্লগের মাধ্যমে এডসেন্স একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। এডসেন্স একাউন্ট তৈরি করার পর গুগল আপনার ব্লগ যাচাই বাছাই করে দেখবে। আপনার ব্লগে ভালোমানের কনটেন্ট থাকার পাশাপাশি ব্লগে পর্যাপ্ত ভিজিটর থাকলে গুগল আপনার এডসেন্স অনুমোদন করবে।
তখন আপনি ব্লগের বিভিন্ন জায়গাতে গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন বসাতে পারবেন। যখন আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন শো হবে এবং মানুষজন বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবে তখন আপনার এডসেন্স একাউন্টে ডলার জমা হতে থাকবে।
আপনার ব্লগে যত বেশি ভিজিটর থাকবে আপনার ইনকাম তত বেশি হবে। তবে বেশি ইনকাম করার আশায় কখনো নিজের বিজ্ঞানে নিজে ক্লিক করবেন না। নিজের বিজ্ঞাপনে নিজে ক্লিক করলে আপনার এডসেন্স একাউন্ট যেকোন সময় স্থায়িভাবে গুগল বন্ধ করে দিবে।

 এফিলিয়েট মার্কেটিং
অনলাইনে অন্যের প্রোডাক্ট বিক্রি করে কমিশন পাওয়ার মাধ্যমে অনলাইনে ইনকাম করাকে এফিলিয়েট মার্কেটিং বলা হয়। আপনি যদি অনলাইনে বেশি টাকা ইনকাম করতে চান এবং যদি পরিশ্রমী আর ধৈর্য্যশীল মানুষ হন, তাহলে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আনলিমিটেড টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

কিভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবেন?

বর্তমানে অনলাইনে অনেক বড় বড় শপিং মল রয়েছে। যেমন- এমাজন এফিলিয়েট, আলিবাবা ও ফ্লিপকার্ট। আমাদের দেশের জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেট হচ্ছে Daraz ও Evaly. এ ধরনের শপিং মল গুলো তাদের প্রোডাক্ট প্রচারের জন্য বিভিন্ন ভাবে প্রচারনা চালায়।
এ ক্ষেত্রে আপনার ঐ সমস্ত শপিং মলের সাইটে রেজিস্ট্রেশন করে তাদের পন্যের লিংক আপনার ব্লগে শেয়ার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে পন্যের লিংক শেয়ার করার পূর্বে কাঙ্খিত প্রোডাক্ট এর ভালো দিকগুলো তুলে ধরে একটি আর্টিকেল লিখতে পারেন। তখন পন্য সম্পর্কে ভিজিটররা পোস্টটি পড়ার সময় আপনার শেয়ার করা লিংকে ক্লিক করে ঐ অনলাইন শপিং মল থেকে পন্য কিনলে সেই পন্যের দাম হতে কিছুটা কমিশন আপনাকে দেওয়া হবে।

 স্পনসর পোস্ট

আপনার ব্লগ যখন জনপ্রিয় হতে থাকবে তখন লোকজন তাদের পন্যের ভালো দিক গুলো তুলে ধরার জন্য আপনার সাথে যোগাযোগ করবে। সাধারণত এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন ডিজিটাইল প্রোডাক্ট সম্পর্কে তুলে ধরে একটি বিস্তারিত পোস্ট লিখতে হয়। আপনার ব্লগ জনপ্রিয় হওয়ার কারনে লোকজন আপনার ব্লগের মাধ্যমে অন্যের প্রোডাক্ট সম্পর্কে জানতে পারবে। বিনিময়ে আপনি ঐ কোম্পানির নিকট থেকে ভালোমানের টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
সাধারণত একটি ব্লগ যত বেশি জনপ্রিয় হয় সেই ব্লগের স্পনসরশীপ রেট তত বেশি হয়। আপনি যদি একজন ভালোমানের লেখক হন এবং আপনার ব্লগের প্রচুর পরিমানে ভিজিটর থাকে তাহলে একটি স্পনসর পোস্ট থেকে ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন।

অনলাইন কোর্স

কোভিড-১৯ মাহামারির পর থেকে আমাদের দেশের লেখাপড়া অনেকাংশে এখন অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়েছে। তা না হলে হয়ত আমরা অনলাইন কোর্স বিষয়টি সহজে বুঝতে পারতাম না। এখন আমাদের দেশের প্রাইমারি স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া পর্যন্ত অনলাইনে চলছে।  এখানে অনলাইন কোর্স বলতে বিভিন্ন ধরনের কোর্স বুঝানো হচ্ছে। আপনার যে বিষয়ে অভীজ্ঞতা আছে আপনি চাইলে সেই বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের কোর্স চালু করে সেটা PDF আকারে আপনার ব্লগে শেয়ার করে বিক্রি করতে পারেন।তাছাড়াও আপনার ভালোমানের কোন লেখা ব্লগে শেয়ার করে সেটি লক করে রাখতে পারেন। অর্থাৎ আপনার কোর্সের কিছু অংশ লোকজনকে পড়তে দিবেন এবং অবশিষ্ট অংশ লক করে রাখবেন। এতেকের লোকজন আপনার কোর্স পছন্দ করলে লক করা অংশটুকো টাকার বিনিময়ে ক্রয় করতে পারে। এ ক্ষেত্রে আপনার যত ভালোমানের কোর্স থাকবে আপনি তত বেশি অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন।

ব্লগ বিক্রি করে ইনকাম

আপনি যদি একটি ব্লগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করতে পারেন তাহলে সেই ব্লগ বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। কারণ একটি জনপ্রিয় ব্লগের চাহিদা অনলাইনে প্রচুর পরিমানে রয়েছে। তবে আপনার ব্লগের মূল্য কত টাকা হবে সেটা আপনার ব্লগের জনপ্রিয়তার উপর ডিপেন্ড করবে। সাধারণত একটি ব্লগ বিক্রি করে নরমালি ৩/৪ লক্ষ টাকা ইনকাম করা যায়। আর যদি প্রচুর জনপ্রিয় ব্লগ হয় তাহলে কয়েক মিলিয়ন ইনকাম করা সম্ভব।

অনলাইনে ইনকাম করার উপায়
অনলাইনে ইনকাম করার উপায়
০২। YouTube থেকে ইনকাম
বর্তমান সময়ে ইউটিউব হচ্ছে অনলাইন ইনকাম এর সবচাইতে জনপ্রিয় মাধ্যম। এমনকি এখন আমাদের দেশের অনেক শিক্ষিত লোক চাকরি না করে ইউটিউবিং করে ঘরে বসে মাসে মাসে ৫/৬ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে। আমাদের দেশের এমনও ইউটিউব চ্যানেল আছে যারা একা একা ইউটিউবে কাজ করে মাসে ২০ লক্ষ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে।
ইউটিউব থেকে যে কোন বয়সের লোক খুবই সহজে টাকা ইনকাম করতে পারেন। ইন্টারনেট বিশ্বের জনপ্রিয় ১০ ওয়েবসাইটের মধ্যে YouTube হচ্ছে একটি। আপনি ইচ্ছে করলেই এখান থেকে কম সময় ব্যয় করে অল্প অভীজ্ঞতা নিয়ে মাসে ভালো মানের টাকা অনলাইনে ইনকাম করতে পারেন। এই জন্য আপনাকে যেটি করতে হবে- প্রথমে বিভিন্ন ভাল মানের ভিডিও YouTube এ আপলোড করতে হবে। ভিডিও তৈরি করার জন্য আপনার মোবাইল ফোনকে ব্যবহার করতে পারেন।
আপনি যদি ভ্রমন প্রিয় লোক হন তাহলে বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর প্রকৃতিক দৃশ্যগুলো আপনার মোবাইলের ক্যামেরায় ফ্রেমবন্দী করেও এ কাজটি করতে পারেন। অথবা আপনি যে বিষয় ভালভাবে জানেন সে বিষয়ে বিভিন্ন ভিডিও টেউটরিয়াল তৈরী করেও কাজটি করতে পারেন। যারা গৃহিনী রয়েছেন তারা চাইলে বিভিন্ন রান্নার রেসিপি টিপস ও সাজগোজের করার ভিডিও তৈরি করে নিতে পারেন।

৩। ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম

অনলাইনে আয়ের ক্ষেত্রে বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় প্লাটফর্ম। ফ্রিল্যান্সিং করে বর্তমানে বাংলাদেশের হাজার হাজার লোক ঘরে বসে অনলাইনে টাকা ইনকাম করছে। তাছাড়া বর্তমান সরকার দেশের শিক্ষিত বেকার যুবকদের কাজে লাগানোর জন্য ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর ব্যবস্থা চালু করেছে। অনেকে সেই সমস্ত সরকারী প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান হতে প্রশিক্ষণ গ্রহন করে Freelancing এর মাধ্যমে মাসে লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা ইনকাম করে স্বাবলম্বি হচ্ছে।
Freelancing হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যেখানে আপনি আপনার মেধাকে কাজে লাগিয়ে ঘরে বসে অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করে নিতে পারবেন। আপনি যদি একজন ভাল লেখক হন কিংবা যে কোন বিষয়ে ভাল জ্ঞান রাখেন, তাহলে সে বিষয়ে ভালোমানের আর্টিকেল লিখে Freelancing এর কাজ করতে পারবেন। আপনার লেখার মান যদি ভাল হয় তাহলে Freelancing এ আপনার লেখার মূল্য অর্থাৎ টাকা ইনকামের পরিমান দিন দিন বাড়তে থাকবে। এখান থেকে মাসে লাখ টাকা ইনকাম করে এমন লোকও আছে। এখানে যার যার মেধা অনুসারে তার প্রতিফলন ঘটাতে পারে।
তাছাড়া ফ্রিল্যান্সিংয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন থেকে শুরু আরো বিভিন্ন ধরনের কাজের প্রচুর পরিমানে ডিমান্ড রয়েছে। এক কথায় আপনার যদি কোন কাজের অভীজ্ঞতা থাকে তাহলে ফ্রিল্যান্সিং করে ঘরে বসে অনলাইনে টাকা ইনকাম করা কোন ব্যাপার হবে না।

০৪। গ্রাফিক্স ডিজাইন

অনলাইনে গ্রাফিকস ডিজাইনের চাহিদা প্রচুর পরিমানে রয়েছে। অনলাইনে ঘরে বসে আয়ের ক্ষেত্রে গ্রাফিকস ডিজাইন একটি ভালো উপায়। যারা এই কাজে দক্ষ, তারা বিভিন্ন ডিজাইন বিষিয়ক অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে তাদের নিজেস্ব ডিজাইন দিয়ে রাখেন। সেখান থেকে তাদের ডিজাইনগুলো ক্রেতাদের পছন্দ হলে কিনে নেয়।
তাছাড়াও বর্তমানে ফ্রিল্যান্স মার্কেটে গ্রাফিক্স ডিজাইনের ডিমান্ড প্রচুর পরিমানে থাকার কারনে এ বিষয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে স্মার্ট এমাউন্ট ইনকাম করা সম্ভব হয়। বিশেষকরে Fiver ও Upwork ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ বেশি পরিমানে পাওয়া যায়। কাজেই গ্রাফিক্স ডিজাইন জানলে ফ্রিল্যান্সিং করে সহজে অনলাইনে ইনকাম করা সম্ভব হবে।
এছাড়া গ্রাফিক্স ডিজাইনের বিশেষত্ব হচ্ছে, এ ধরনের একটি পণ্য অনেকবার বিক্রি যায়। অর্থাৎ একটি ভালো নকশা থেকেই দীর্ঘদিন পর্যন্ত আয় হতে থাকে। অনলাইনে এ ধরনের অনেক ওয়েবসাইটে গ্রাফিকসের কাজ বিক্রি করা যায়। গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার কাজটি আপনি প্রাথমিকভাবে এডোবি ফটোশপ থেকে শুরু করতে পারেন।

০৫। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর বড় একটি অংশ হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে এক দিকে যেমন বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পন্যের প্রচার ও সেল বিক্রি করে ইনকাম করছে, অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে যারা ভালো অভীজ্ঞতা সম্পন্ন তারা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে অনলাইনে বিভিন্ন কোম্পানির নিকট থেকে মাসে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছে। জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট এখন আর শুধু বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য নয়। এগুলোকে কাজে লাগিয়ে আপনি সহজে অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন। আপনার ৩-৫ টি ফেসবুক পেজে প্রচুর পরিমানে ফলোয়ার থাকলে আপনি ঘরে বসে খুব সহজে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন কোম্পানির নিকট থেকে ফেসবুকে টাকা আয় করতে পারবেন।
কারণ যেকোন কোম্পানির পন্যের প্রচারের জন্য এখন ফেসবুক ও টুইটার খুবই জনপ্রিয় মাধ্যম। এ ক্ষেত্রে আপনার জনপ্রিয় কোন সোশ্যাল মিডিয়া থাকলে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন কোম্পানি আপনার সাথে যোগাযোগ করবেই। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্যান-ফলোয়ার তৈরিসহ তাঁদের ধরে রাখতে প্রচুর ধৈর্য ও প্রাসঙ্গিক বিষয় হওয়া জরুরি।
তাছাড়া বর্তমানে ফেসবুকে পন্যের পেইড প্রমোশন করার সিস্টেম থাকায় অল্প টাকা খরছ করে ফেসবুকে ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দেওয়া সম্ভব হয়। এ ক্ষেত্রে আপনার যদি কোন ছোট খাটো ব্যবসা থাকে তাহলে ফেসবুকে আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দেওয়ার মাধ্যমে পন্যের বিক্রি বাড়িয়ে ইনকাম করতে পারেন।

৬। ই-কমার্স সাইট থেকে ইনকাম

টেকনোলজি উন্নতি সাধনের সাথে সাথে মানুষ দিন দিন খুব অনলাইন কেনা কাটার প্রতি নির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে ই-কমার্স সাইট বা অনলাইন মার্কেটপ্লেসে প্রচুর পরিমানে ব্যবসা সফল হচ্ছে। আপনি চাইলে নিজেই অথবা বন্ধু বান্ধব মিলে শুরু করতে পারেন নিজেদের ই-কমার্স সাইট। বর্তমানে ই-কমার্স সাইটের মাধ্যমে ইনকাম করার প্রবনতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ই-কমার্স সাইট করে সফল হতে হলে আপনাকে কিছু ট্রিক্স অবলম্বন করতে হবে। আপনার আসে পাশের সেই পন্য গুলো নিয়ে কাজ করুন যে গুলো এখনো অনলাইনে সচরচর পাওয়া যায় না। মানুষের দোরগোড়ায় ভাল মানের পন্য পৌঁছে দিন প্রতিদ্বন্দ্বী মার্কেটের তুলনায় কিছুটা কম মূল্যে। বিশ্বাস করুন আপনি যত টা কঠিন ভাবছেন এটা করা তার থেকে অনেক সহজ শুধু আপনাকে শুরু করতে হবে এবং ধর্য ধরে এগিয়ে যেতে হবে।

৭। এসইও করে ইনকাম

বর্তমানে অনলাইনে মিলিয়ন মিলিয়ন ওয়েবসাইট রয়েছে। সবাই তাদের ব্লগকে গুগল সার্চের ১ম পাতায় নিয়ে আসার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। কিন্তু একই ধরনের ওয়েবসাইটের মধ্যে প্রতিযোগিতা করে গুগলের ১ম পাতায় আসা খুব সহজ কোন বিষয় নয়। এ জন্য এখন সবাই এসইও করার জন্য মনোযোগি হচ্ছে। যার ধরুন প্রতিনিয়ত এসইও এক্সপার্টদের চাহিদা বাড়ছে।  ধরুন, আপনার একটি ওয়েবসাইট আছে। যেই ওয়েবসাইটে আপনি টি-শার্ট এর মার্কেটিং করেন। আপনি চাইছেন কেউ যখন টি-শার্ট লিখে গুগলে সার্চ করবে তখন আপনার ওয়েবসাইটটি সবার উপরে আসবে। এই কাজটি করার জন্য আপনার ওয়েবসাইটের এসইও করতে হবে বিধায় একজন এসইও এক্সপার্ট এর সহযোগিতা নিতে হবে।
 কাজেই কেউ যদি ভালোভাবে এসইও শিখতে পারে তাহলে সে যেকোন কোম্পানির এসইও এক্সপার্ট হিসেবে কাজ করে মাসে লাখ টাকা ইনকাম করতে পারবে। তাছাড়া আপনার যদি পার্সনাল কোন ব্লগ থাকে সেটিতেও ট্রাফিক বৃদ্ধি করার জন্য ব্লগের এসইও করার প্রয়োজন হবে। সেই হিসেবে আপনি ভালোভাবে এসইও জানলে ব্লগে ট্রাফিক বৃদ্ধি করে অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন।

৮। অনলাইনে ছবি বিক্রি করে ইনকাম

ছবি তোলার অভ্যাস থাকলে কিংবা আপনি একজন ভালোমানের ফটোগ্রাফার হলে অনলাইনে ছবি বিক্রি করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আপনি আশে-পাশের প্রকৃতি, স্থান, মানুষ, জিনিস, খাবার, সহ যে কোন কিছুর ভাল ছবি তুলে সেগুলো অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন।
শাট্টারস্টক, ফোটোলিয়া, আইস্টকফটো, ফটোবিককেটের মত বড় বড় সাইটগুলি রয়েছে যেখানে আপনি আপনার তোলা ফটো জমা দিতে পারেন। যখনই কোনও গ্রাহক আপনার তোলা কোন ছবি কিনবে, আপনি আপনার ছবির নির্দিষ্ট মূল্য পেয়ে যাবেন। অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার বিষয়েও আমাদের ব্লগে একটি বিস্তারিত পোস্ট রয়েছে।

৯। এন্ড্রয়েড এপস থেকে ইনকাম

একটি ব্লগের মত এন্ড্রয়েড এপস দিয়ে অনেক ভালোমানের টাকা ইনকাম করা যায়। এ ক্ষেত্রে আপনার নিজেস্ব একটি এন্ড্রয়েড এপস থাকতে হবে এবং সেটি গুগল প্লে-স্টোরে থাকতে হবে। আপনার এন্ড্রয়েড এপটি যদি প্রচুর পরিমানে লোকজন ব্যবহার করে তাহলে আপনি এপস মনিটাইজ করে অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন।
সাধারণত আপনি দেখে থাকেন যে, আমাদের মোবাইলে যখন ইন্টারনেট কানেকশন অন থাকে তখন কোন এপস চালু করার সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন শো হতে থাকে। এই বিজ্ঞাপন থেকে মূলত একজন এপস এর মালিক ইনকাম করে থাকে।

১০। EBAY and AMAZON এ Products বিক্রি

আপনারা হয়তো জানেন যে, ইন্টারনেট এর মাধ্যমে পন্য কেনা কাটার জন্য জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হচ্ছে Ebay and Amazon. এখানে লোকজন তাদের বিভিন্ন ধরনের Products বিক্রি করার জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন। আপনার পন্যটি যদি ক্রেতার কাছে ভাল মনে হয়, তাহলে পন্যটি কেনার জন্য ক্রেতারা আপনার সাথে যোগাযোগ করবে।
আপনি যদি আপনার Products বিক্রি করে একজন ভালোমানের বিক্রেতা হতে পারেন, তাহলে এখান থেকে কমদামে বিভিন্ন জিনিস ক্রয় করে ভালো দামে বিক্রয় করে লাভবান হতে পারেন। তবে এই সুবিধা পাওয়ার জন্য আপনাকে আগে একজন ভাল মানের বিক্রেতা হিসেবে প্রমান করতে হবে।

১১। ডাটা এন্ট্রি

অনলাইনে সহজ কাজগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ডাটা এন্ট্রি। এ ক্ষেত্রে অবশ্য আয় খুব কম। তবে এ ধরনের কাজ অটোমেশনের কারণে এখন খুব কম পাওয়া যায়। যাদের কম্পিউটার, ইন্টারনেট ও দ্রুতগতির টাইপিং দক্ষতা আছে, তারা এ ধরনের কাজ করতে পারবেন। অধিকাংশ ফ্রিল্যান্সিং সাইটে এ ধরনের কাজ রয়েছে। তবে যাদের কোনো কাজে দক্ষতা থাকে, তারা সহজে কাজ পান এবং দ্রুত আয় বাড়াতে পারেন।

আসলে অনলাইন ইনকাম করা ১/২ মাসে সম্ভব হয় না। আপনি যদি প্রকৃতপক্ষে অনলাইনে ইনকাম করতে চান তাহলে আপনাকে কমপক্ষে ৬ মাস মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে হবে। কেউ যদি ৬ মাস নিয়মিত কাজ করে তাহলে ৬ মাস পর অবশ্যই প্রতি মাসে ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *